ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার মাস হিসেবে পরিচিত। অনেক প্রতীক্ষার পর ১৯৫২ সালে আমরা রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা কে পেয়েছি। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি অনেক ভাষা শহিদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা পেয়েছি। এর পর থেকেই প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। তাই আজকে আমরা ভাষা শহিদ দের উদ্দেশ্য শহীদ দিবসের বিখ্যাত কবিতা ২০২২ নিয়ে আলোচনা করব।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কবিতা আবৃত্তি করতে চায়। তাই আজকে আমরা আপনাদের জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর বাছাইকৃত কিছু শহীদ দিবসের কবিতা সংগ্রহ করেছি। সুতরাং আপনি যদি একুশের কবিতা খুজে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য উপযুক্ত। আশা করি এখানে দেয়া মাতৃভাষা দিবসের সকল কবিতা গুলো অনেক পছন্দ হবে।
শহীদ দিবসের কবিতা
বলতে নিষেধ করে
এমন কথা শোনে বলো
থাকি কেমনে ঘরে।খোকার হাতে ভাষার নিশান
প্রতিবাদের স্লোগান
বুকের রক্ত দিয়ে মাগো
রাখলো ভাষার মান।দিকে দিকে উঠলো জেগে
মায়ের মুখের হাসি
গানের সুরে মাঝিমাল্লা
বঙ্গ কৃষাণ চাষি।ফুলের মেলা সবুজ বাগে
স্বাধীনতার ছড়া
বিশ্ব জুড়ে বাংলা মায়ের
অথৈ সুবাস ভরা।
একুশ মানে মাতৃভাষার
জন্ম দিবস সবার
জগৎ জুড়ে তাইতো মাগো
ধন্য হলো এবার।
বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়! বরকতের রক্ত
হাজার যুগের সূর্যতাপে, জ্বলবে এমন লাল যে
সেই লোহিতেই লাল হয়েছে, কৃষ্ণচূরার ডাল যে
প্রভাতফেরির মিছিল যাবে, ছড়াও ফুলের বন্যা
বিষাদগীতি গাইছে পথে, তিতুমিরের কন্যা
চিনতে নাকি সোনার ছেলে, ক্ষুদিরামকে চিনতে?
রিদ্ধস্বাশে প্রাণ দিল যে, মুক্ত বাতাস কিনতে
পাহাড়তলীর মরণ চূরায়, ঝাঁপ দিলো যে অগ্নী
ফেব্রুয়ারীর শোকের বসন, পড়ল তারই ভগ্নী
প্রভাতফেরী, প্রভাতফেরী, আমায় নেবে সঙ্গে?
বাংলা আমার বচন, আমি জন্মেছি এই বঙ্গে।”
মাতৃভাষা দিবসের কবিতা
শহীদ দিবস
– Md. Shaharukh Hossain
সারাবছর শহীদ ভাইদের
শ্রদ্ধা নাহি মেলে
যত শ্রদ্ধা দিচ্ছি আমরা
শহীদ দিবস এলে
খালি পায়ে চলে যাচ্ছি
ঐ শহীদ মিনারে
ফুলের তোড়া দিয়ে আসছি
যা থাকছে কিনারে
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন
ছিলো কিসের জন্য?
মুক্তিবাহিনীর কারনেই
হয়েছি আজ ধন্য
এদেশের দামাল ছেলেরা
করেনি তো বড়াই
নিজের মাতৃভাষার জন্য
করে গেছে লড়াই
তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে
এনে দিয়েছে দেশ
তাদের স্মরণে করতে চাও
এই ফুলের তোড়া পেশ!
ফুলের তোড়াতে কি তাদের
শান্তি পাবে আত্মা?
তাদের কাছে ফুলের তোড়ার
নেই যে কোনো পাত্তা
তাদের কাছে পৌঁছাবে তো
দোয়া আর মাগফিরাত
তারা যেন জান্নাতে যায়
হয়ে পার পুলসিরাত
শুধু দোয়া করতে হবে
সৃষ্টিকর্তার তরে
আল্লাহ্তালা তাদের যেন
জান্নাতবাসী করে
একুশের কবিতা
“পরের মুখে শেখা বুলি পাখির মত ক্যান বলিশ !
পরের ভঙ্গি নকল করে নটের মত ক্যান চলিশ!
তর নিজস্ব সর্বাঙ্গে তোর দিলেন ধাতা আপন হাতে
মুছে সেটুকু বাজে হলি, গৌরব কি বাড়লো তাতে?
আপনারে যে ভেঙ্গে চুরে গড়তে চায় পরের ছাচে
অলিক, ফাকি, মেকি, সেজন নামটা তার কদিন বাচে?
পরের চুরি ছেড়ে দিয়ে আপন মাঝে ডুবে যা রে,
খাঁটি ধন যা সেথায় পাবি, আর কোথাও পাবি নারে “
মনে পড়ে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারী,
লাখো বাঙালির কাতর চিত্তে করুন আহাজারি.
একুশ তুমি বাংলার মানুষের হৃদয় ভরা আশা,
তোমার কারণে পেয়েছি আজ কাঙ্খিত মাতৃভাষা.
রক্ত ঝরালো সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বার,
বায়ান্নর সেই করুন কাহিনী মনে পড়ে বারবার.
স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে সেই বিষন্ন দিনের কথা,
যত ভাবি ততই যেন মনে পাই বড় ব্যথা.
প্রতিবাদে মুখর দৃঢ় চিত্তে বাংলার দামাল ছেলে,
আরো আছে কত শ্রমিক, যুবক, নারী, কৃষক ও জেলে.
অবশেষে দাবি মেনে নিতে বাধ্য হলো সরকার,
বাঙালিরা পেল মাতৃভাষার সোনালী দিবাকর.
রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আজ কাঙ্খিত মাতৃভাষা,
একুশের সেরা কবিতা
একুশ আমার মাতৃভূমি
লাল সবুজের স্বাধীন পতাকা,
একুশ আমার বীর-বাঙালির
বাংলা ভাষার মুক্ত কবিতা।
একুশ আমার মায়ের মুখে-
শেখা বুলি; প্রথম বর্ণস্বর,
একুশ আমার মায়ের বুকে
ফিরে যাওয়া আনন্দমুখর।
একুশ আমার ন্যায় অধিকার
নীতি কথার মুক্ত বিচরণ,
একুশ আমার সবুজ ব্যানার
রক্তে রাঙা শহিদী-স্মরণ।
একুশ আমার প্রিয়ার খোঁপায়
গুজিয়ে দেওয়া রাঙা কুসুম,
একুশ আমার মায়ের দু-পা’য়
বুঝিয়ে দেওয়া শক্তি বিষম।
একুশ এলে বিভীষিকাময় রাজপথ
নিত্য নতুন আন্দোলনের স্বপ্ন দেখা,
একুশ এলে রফিক সালাম বরকত
এদের নামে নিত্য নতুন কাব্য লেখা।