কেমন আছেন সবাই, আশা করি সকলে ভালো আছেন। আপনি কি কবি পড়তে ভালোবাসেন? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্যই। কেননা আজকের পোস্টটি আমরা হুমায়ূন আহমেদ এর রোমান্টিক কবিতা নিয়ে সাজিয়েছি। এই পোস্ট এ হুমায়ূন আহমেদ এর বাছাইকৃত কবিতা লেখা হয়েছে। আশা করি সব গুলো কবিতাই আপনার ভাল লাগবে। আপনি চাইলে কবিতা গুলো আপনার মনের মানুষের কাছেও পাঠাতে পারেন। আশা করি সেও কবিতা গুলা পছন্দ করবে। তো চলুন দেরি না করে কবিতা গুলো পড়ে নেই হুমায়ূন আহমেদ এর রোমান্টিক কবিতা ।
আপনারা জানেন হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের একজন নাম করা লেখক। তার লেখা গুলো মোটামুটি সকলেই পছন্দ করে। আপনিও যদি হুমায়ূন আহমেদ এর রোমান্টিক কবিতা খুজে থাকেন তাহলে দয়া করে নিচের কবিতা গুলা দেখতে পারেন। কবিতা গুলা পড়ে আপনার অনুভূতি কেমন তা অবশ্যই নিচের কমেন্টস বক্সে জানিয়ে দিবেন আশা করি।
হুমায়ূন আহমেদের সেরা কবিতা
আপনি কি হুমায়ূন আহমেদ ভক্ত? যদি আপনি তার লেখা গুলো পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার লীখা গুলো ভাল লেগে থাকবে। আমিও বেক্তিগত ভাবে তাকে পছন্দ মরি। তাই আপনাদের জন্য হুমায়ূন আহমেদের সেরা কবিতা গুলা আজকের পোস্টে শেয়ার করেছি। এছারা আপনি চাইলে হুমায়ূন আহমেদ কবিতার বই pdf আকারে সংগ্রহ করে নিতে পারেন। আজকের পোস্ট এর মাধ্যমে আপনারা হুমায়ূন আহমেদের চিরকুট কবিতা সহ আরও অনেক ভালবাসার কবিতা পাবেন। নিচে সব গুলো কবিতা দেয়া হল।
কবিতা (০১)
আমি খুব অল্প কিছু চাই
– হুমায়ুন আহমেদ
আমাকে ভালবাসতে হবে না,
ভালবাসি বলতে হবে না.
মাঝে মাঝে গভীর আবেগ
নিয়ে আমার ঠোঁট
দুটো ছুয়ে দিতে হবে না.
কিংবা আমার জন্য রাত
জাগা পাখিও
হতে হবে না.
অন্য সবার মত আমার
সাথে রুটিন মেনে দেখা
করতে হবে না. কিংবা বিকেল বেলায় ফুচকাও
খেতে হবে না. এত
অসীম সংখ্যক “না”এর ভিড়ে
শুধু মাত্র একটা কাজ
করতে হবে আমি যখন
প্রতিদিন এক বার “ভালবাসি” বলব
তুমি প্রতিবার
একটা দীর্ঘশ্বাস
ফেলে একটু
খানি আদর মাখা
গলায় বলবে “পাগলি”
কবিতা (০২)
বাসর
হুমায়ুন আহমেদ
কপাটহীন একটা অস্থির ঘরে তার সঙ্গে দেখা ।
লোহার তৈরি ছোট্ট একটা ঘর ।
বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কোন যোগ নেই ।
ঘরটা শুধু উঠছে আর নামছে ।
নামছে আর উঠছে ।
মানুষ ক্লান্ত হয় –
এ ঘরের কোন ক্লান্তি নেই।
এ রকম একটা ঘরেই বোধহয় বেহুলার বাসর হয়েছিল ।
নিশ্ছিদ্র লোহার একটা ঘর ।
কোন সাপ সেখানে ঢুকতে পারবে না ।
হিস হিস করে বলতে পারবে না, পাপ করো। পৃথিবীর সব আনন্দ পাপে ।
পুণ্য আনন্দহীন । উল্লাসহীন ।
পুণ্য করবে আকাশের ফিরিশতারা ।
কারণ পুণ্য করার জন্যেই তাদের তৈরি করা হয়েছে ।
লোহার সেই ঘরে ঢোকার জন্য সাপটা পথ খুঁজছিলো ।
সেই ফাঁকে বেহুলা তাঁর স্বামীকে বললেন, কি হয়েছে, তুমি ঘামছ কেন ?
আর তখন একটা সুতা সাপ ঢুকে গেলো।
ফিসফিস করে কোন একটা পরামর্শ দিতে গেলো ।
বেহুলা সেই পরামর্শ শুনলেন না বলেই কি লখিন্দরকে মরতে হল ?
তার সঙ্গে আমার দেখা কপাটহীন একটা অস্থির ঘরে ।
ঘরটা শুধু ওঠে আর নামে ।
আমি তাকে বলতে গেলাম – আচ্ছা শুনুন, আপনার কি মনে হচ্ছে না
এই ঘরটা আসলে আমাদের বাসর ঘর ?
আপনি আর কেউ নন, আপনি বেহুলা ।
যেই আপনি ভালবেসে আমাকে কিছু বলতে যাবেন
ওম্নি একটা সুতা সাপ এসে আমাকে কামড়ে দেবে ।
আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন । দয়া করে কিছু বলবেন না ।
কবিতা (০৩)
আমি খুব অল্প কিছু চাই
– হুমায়ুন আহমেদ
প্রতি পূর্নিমার মধ্যরাতে একবার আকাশের দিকে তাকাই
গৃহত্যাগী হবার মত জ্যোৎস্না কি উঠেছে ?
বালিকা ভুলানো জ্যোৎস্না নয়।
যে জ্যোৎস্নায় বালিকারা ছাদের রেলিং ধরে ছুটাছুটি করতে করতে বলবে-
ও মাগো, কি সুন্দর চাঁদ !
নবদম্পতির জ্যোৎস্নাও নয়।
যে জ্যোৎস্না দেখে স্বামী গাঢ় স্বরে স্ত্রীকে বলবেন-
দেখ দেখ নীতু চাঁদটা তোমার মুখের মতই সুন্দর !
কাজলা দিদির স্যাঁতস্যাতে জ্যোৎস্না নয়।
যে জ্যোৎস্না বাসি স্মৃতিপূর্ন ডাস্টবিন উল্টে দেয় আকাশে।
কবির জ্যোৎস্না নয়। যে জ্যোৎস্না দেখে কবি বলবেন-
কি আশ্চর্য রূপার থালার মত চাঁদ !
আমি সিদ্ধার্থের মত গৃহত্যাগী জ্যোৎস্নার জন্য বসে আছি।
যে জ্যোৎস্না দেখামাত্র গৃহের সমস্ত দরজা খুলে যাবে-
ঘরের ভেতরে ঢুকে পরবে বিস্তৃত প্রান্তর।
প্রান্তরে হাঁটব, হাঁটব আর হাঁটব-
পূর্নিমার চাঁদ স্থির হয়ে থাকবে মধ্য আকাশে।
চারদিক থেকে বিবিধ কন্ঠ ডাকবে- আয় আয় আয়।
কবিতা (০৪)
সংসার
– হুমায়ুন আহমেদ
দুঃখ তার বিষমাখা তীরে তোকে
বিঁধে বারংবার।
তবুও নিশ্চিত জানি,একদিন হবে তোর
সোনার সংসার ।।
উঠোনে পড়বে এসে একফালি রোদ
তার পাশে শিশু গুটিকয়
তাহাদের ধুলোমাখা হাতে – ধরা দেবে
পৃথিবীর সকল বিস্ময়।
কবিতা (০৫)
অশ্রু
– হুমায়ুন আহমেদ
উপহার বগলে নিয়ে
আমি আর আতাহার,
মৌচাক মোড়ে এসে বাস থেকে নামলাম
দু’সেকেন্ড থামলাম।।
টিপটিপ ঝিপঝিপ
বৃষ্টি কি পড়ছে?
আকাশের অশ্রু ফোঁটা ফোঁটা ঝরছে?
আমি আর আতাহার
বলুন কি করি আর?
উপহার বগলে নিয়ে আকাশের অশ্রু
সারা গায়ে মাখলাম।।
হি হি করে হাসলাম।।
কবিতা (০৬)
কাচপকা
– হুমায়ুন আহমেদ
হাঁটতে হাঁটতে এক ঝলক রোদের মধ্যে পড়ে গেল।
ঝিকমিকিয়ে উঠল তার নকশাকাটা লাল নীল সবুজ শরীর।
বিরক্ত হয়ে বলল,রোদ কেন?
আমি চাই অন্ধকার ।চির অন্ধকার
আমার ষোলটা পায়ে একটা ভারি শরীর বয়ে নিয়ে যাচ্ছি-
অন্ধকার দেখব বলে।
আমি চাই অন্ধকার ।চির অন্ধকার
একটা সময়ে এসে রোদ নিভে গেল
বাদুড়ে ডানায় ভর করে নামল আঁধার।
কি গাঢ়,পিচ্ছিল থকথকে অন্ধকার !
কাচপোকার ষোলটা ক্লান্ত পা বার বার
সেই পিচ্ছিল আঠালো অন্ধকারে ডেবে যাচ্ছিল।
তার খুব কষ্ট হচ্ছিল হাঁটতে
তবু সে হাঁটছে-
তাকে যেতে হবে আরও গভীর অন্ধকারে।
যে অন্ধকার-আলোর জন্মদাত্রী।
হুমায়ূন আহমেদের রোমান্টিক প্রেমের কবিতা
হুমায়ূন আহমেদে বরাবরই সবার জন্য রোমান্টিক ছন্দ বা কবিতা লিখে থাকেন। তাই আপনাদের জন্য হুমায়ূন আহমেদের রোমান্টিক প্রেমের কবিতা শেয়ার করলাম। আশা করি আপনাদের খুব ভাল লাগবে।
কবিতা (০৭)
বাবার চিঠি
– হুমায়ুন আহমেদ
আমার বৃদ্ধ পিতা আমাকে পাঠাচ্ছেন তাঁর
প্রথম প্রেমিকার কাছে।
আমার প্যান্টের পকেটে সাদা খামে মোড়া বাবার লেখা দীর্ঘ পত্র।
খুব যত্নে খামের উপর তিনি তাঁর প্রণয়িনীর নাম লিখেছেন।
কে জানে চিঠিতে কি লেখা – ?
তাঁর শরীরের সাম্প্রতিক অবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা ?
রাতে ঘুম হচ্ছেনা, রক্তে সুগার বেড়ে গেছে
কষ্ট পাচ্ছেন হাঁপানিতে – এইসব হাবিজাবি। প্রেমিকার কাছে
লেখা চিঠি বয়সের ভারে প্রসঙ্গ পাল্টায়
অন্য রকম হয়ে যায়।
সেখানে জোছনার কথা থাকে না,
সাম্প্রতিক শ্বাসকষ্ট বড় হয়ে উঠে।
প্রেমিকাও একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর
রোগভুগের কথা পড়তে ভালবাসেন।
চিঠি পড়তে পড়তে দরদে গলিত হন –
আহা, বেচারা ইদানিং বড্ড কষ্ট পাচ্ছে তো …
কবিতা (০৮)
কব্বর
– হুমায়ুন আহমেদ
তিনি শায়িত ছিলেন গাঢ় কব্বরে
যার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ বেঁধে দেয়া,
গভীরতা নয়।
কব্বরে শুয়ে তাঁর হাত কাঁপে পা কাঁপে
গভীর বিস্ময়বোধ হয়।
মনে জাগে নানা সংশয়।
মৃত্যু তো এসে গেছে, শুয়ে আছে পাশে
তবু কেন কাটে না এ বেহুদা সংশয়?
শেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্টে আপনারা হুমায়ূন আহমেদ এর রোমান্টিক কবিতা সহ আরও অনেক কবিতা পেয়েছেন। আশা করি সব গুলো কবিতাই আপনার ভাল লেগেছে। দয়া আপনার মতানত নিচের কমেন্টস বক্সে জানাবেন। আপনার যদি ভাল লাগার কোন বিষয় থাকে, যে বিষয়ে আপনি কবিতা পেতে চান। সেটা আমাদের কে অবশ্যই জানাতে পারেন। আমরা আপনার পছন্দ মত কবিতা নিয়ে হাজির হব।
আরঃ
প্রেমিকার জন্য রোমান্টিক কথা ও কবিতা
ফুল নিয়ে স্ট্যাটাস ও ছোট কবিতা
ভালোবাসার রোমান্টিক কবিতা সংগ্রহ ২০২২
বাংলা রোমান্টিক কবিতা সংগ্রহ ২০২২
বউকে নিয়ে রোমান্টিক কবিতা, উক্তি, স্ট্যাটাস ও বাণী